Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১২ মে ২০১৯

ঘূর্নিঝড় ফণিতে ৬৩ হাজার হেক্টর জমি আক্রান্ত, ৩৮ কোটি টাকা ক্ষতি


প্রকাশন তারিখ : 2019-05-08

 

 

ঘূর্ণিঝড় ফণিতে ৬৩ হাজার হেক্টর জমি আক্রান্ত, ৩৮ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঘূর্নিঝড় ‘ফণি’র কারনে আক্রান্ত ফসলি জমি, সম্ভাব্য ক্ষতি ও গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। ঘূর্ণিঝড় ফণি’র কারণে ৬৩ হাজার ৬৩ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়। এ ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্য ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা। এতে ১৩ হাজার ৬৩১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (৭ মে ২০১৯) অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশ এদেশের কৃষির নিত্য সঙ্গী। তবু সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি ও জনবান্ধব সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে এ বৈরিতা মোকাবিলা করেও বাংলাদেশের কৃষি এগিয়ে যাচ্ছে। সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ আঘাত হানার পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে কৃষিক্ষেত্রে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বকালীন, চলাকালীন ও আাঘাত হানার পরবতী ৩ পর্যায়ের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
ঘূর্ণি ঝড় ‘ফণি’র কারণে দেশের প্রায় ৩৫টি জেলার ২০৯টি উপজেলায় বোরো ধান, ভুট্টা, সব্জী, পাট, পান ফসলসহ প্রায় ৬৩ হাজার ৬৩ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত ফসলি জমির মধ্যে বোরো ধানের জমি ৫৫ হাজার ৬ শত ৯ হেক্টর, সব্জীর জমি ৩ হাজার ৬ শত ৬০ হেক্টর, ভুট্টার জমি ৬ শত ৭৭ হেক্টর, পাটের জমি ২ হাজার ৩ শত ৮২ হেক্টর, পান ৭ শত ৩৫ হেক্টর। 

ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত ৩৫টি জেলা হচ্ছে- নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, ময়মানসিং, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, বাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন,  আক্রান্ত জেলার ধানে শতকরা ২ ভাগ, সব্জীতে শতকরা ৯ ভাগ, ভুট্টায় শতকরা ১৫ ভাগ, পাটে শতকরা ৫ ভাগ, পানে শতকরা ১ ভাগ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। কর্মকর্তারা মাঠে কৃষকদের শতকরা ৮০ ভাগ পরিপক্ক ধান কেটে নেয়া ও রবি ভুট্টা ফসল সংগ্রহ এবং খরিপ-১ মৌসুমের বপনযোগ্য ফসলের বীজ বপন না করার পরামর্শ প্রদান করেছেন। হেলে পড়া পরিপক্ক বোরো ধান দ্রুত কেটে ফেলার পরামর্শ প্রদান করা হয়। জলাবদ্ধতার কারনে ক্ষতিগ্রস্থ আউশ ক্ষেতে গ্যাপ পূরণের জন্য ঘনগোছা থেকে চারা উত্তোলন করে ফাঁকা জায়গায় রোপনের পরামর্শ প্রদান করা হয়। সবজি ক্ষেতের জমে থাকা পানি দ্রুত নিস্কাশনের পরামর্শ ও  নষ্ট হওয়া গাছের গোড়ায় নতুন চারা লাগিয়ে শূন্য স্থান পূরণ করার প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হয়।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা তৈরি করে পুনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় বীজ, সার ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করার কর্মসূচী নেয়া হবে। পরবর্তী খরিপ’ ২০১৯ থেকে ২০ মৌসুমে রোপা আমন ধানের বীজ/চারা উৎপাদন, বিতরণ ও মাসকলাই বীজ বিতরণ কর্মসূচী গ্রহণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। ফণিতে ৬৩ হাজার হেক্টর জমি আক্রান্ত ও  ৩৮ কোটি টাকার ক্ষতি মোকাবেলায় রবি ২০১৯ থেকে ২০ মৌসুমে বিনামূল্যে বোরো ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা, চিনাবাদাম. মুগ চাষের জন্য বীজ ও সার বিতরণের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচী নেয়া হবে। এছাড়াও শীতকালীন সব্জী চাষের জন্য পারিবারিক পুষ্টির অংশ হিসেবে বিনামূল্যে বিভিন্ন সব্জী বীজ বিতরণ করার কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার এ মুহূর্তে চাল রপ্তানি করবে না। কারণ আগামী বোরো ধান কাটার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে চাল রপ্তানি করা হবে কি হবে না। এজন্য আমাদের দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে দেশে ধান চাল উদ্বৃত্ত আছে। কৃষকদের থেকেও রপ্তানির চাপ রয়েছে। কৃষক সঠিকভাবে বোরো ঘরে তুলতে পারলে আমাদের উদ্বৃত্ত হলে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রপ্তানি করার কথা জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব সনৎ কুমার সাহা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মীর নুরুল আলমসহ মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন র্কমর্কতারা।