মাননীয় কৃষি মন্ত্রী ২২/০৪/২০১৫ তারিখে আউশ আবাদে ৪৮ টি জেলার কৃষকের জন্য ৩০ কোটি ২১ লক্ষ টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেন
প্রকাশন তারিখ
: 2015-04-22
মাননীয় কৃষি মন্ত্রী আজ (২২/০৪/২০১৫) আউশ আবাদে ৪৮ টি জেলার ২ লক্ষ ১০ হাজার কৃষকের জন্য ৩০ কোটি ২১ লক্ষ টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেন। ঘোষণাটি নিম্নে দেয়া হলো।
আউশ আবাদের প্রণোদনা
আউশ আবাদের গুরুত্বঃ
আউশ ধান হচ্ছে আমাদের প্রকৃতির সাথে মানানসই স্বাভাবিক দানাদার ফসল। সামান্য সেচেই আউশ ধান উৎপাদন সম্ভব। আউশ উৎপাদনে খরচ কম। গম বা অন্য রবি ফসল কাটার পর জমি ফেলে না রেখে আউশ আবাদ করা যায়। এসব কারণে আউশ আবাদ বৃদ্ধির প্রতি সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
আমাদের উৎপাদিত ধানের সিংহভাগই আসে বোরো আবাদ থেকে। কিন্তু বোরো আবাদে প্রচুর পরিমানে পানির প্রয়োজন হয়। এতে খরচও বেশী লাগে। বোরো ধান কর্তনের সময় শিলা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের আশংকা থাকে। এছাড়া বোরো আবাদে খড় যা পাওয়া যায় তা দিয়ে পরবর্তী দীর্ঘ সময় গবাদি পশুর খাদ্যের চাহিদা মিটাতে অসুবিধা হয়। চাষের ব্যয় হ্রাস, পানির সাশ্রয়ী ব্যবহার, কর্তনের সময়ের প্রাকৃতিক ঝুঁকি হ্রাস, গবাদি পশুর খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আউশ আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে এ প্রণোদনা।
এ বছর প্রণোদনা কার্যক্রম নির্বাচনে সাম্প্রতিক শিলা বৃষ্টি ও ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ২১টি জেলা (নোয়াখালী, যশোর, ঝিনাইদহ, বগুড়া, লালমনিরহাট, মেহেরপুর, গাইবান্ধা, নাটোর, জয়পুরহাট, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, খুলনা, সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, কিশোরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, গোপালগঞ্জ ও কুষ্টিয়া) এবং উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও বরেন্দ্র এলাকা যেখানে সেচ সুবিধা অপ্রতুল এবং দক্ষিণাঞ্চলের আউশ নির্ভর ১২টি জেলায় (খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ) উফশী আউশ ও নেরিকা আবাদ করার জন্য এ কর্মসূচির প্রস্তাব করা হয়েছে।
আউশ আবাদের প্রণোদনার উল্লেখযোগ্য বিষয়াদিঃ
উফশী আউশ এর আবাদ বাড়ানোর জন্য চলতি ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে দেশের ৪৮টি জেলায় ২ লক্ষ ১০ হাজার জন কৃষককে ১ বিঘা করে জমি চাষের জন্য মোট ২ লক্ষ ১০ হাজার বিঘা জমি চাষের আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি জেলায় উফশী আউশ চাষের জন্য ১,৮০,০০০ জন কৃষককে জনপ্রতি ১ বিঘা করে ১,৮০,০০০ বিঘা জমি এবং ৩৭টি জেলায় নেরিকা জাতের ধান চাষের জন্য ৩০,০০০ জন কৃষককে জনপ্রতি ১ বিঘা করে ৩০,০০০ বিঘা জমিতে নেরিকা জাতের আউশ ধান চাষের আওতায় আনা হয়েছে;
মাথাপিছু প্রণোদনা দেয়া হবে উফশী আউশের ক্ষেত্রে ১৩৫০.০০ টাকার এবং নেরিকা আবাদের ক্ষেত্রে ১৯৭০.০০ টাকার সার ও বীজ। এর মধ্যে উফশী এবং নেরিকা চাষে উভয় ক্ষেত্রে সেচ সহায়তা হিসাবে জন প্রতি ৪০০ টাকা এবং নেরিকা চাষে আগাছা দমনের জন্য আরো ৪০০.০০ টাকা করে দেয়া হবে;
উফশী আউশ চাষের ক্ষেত্রে জনপ্রতি কৃষককে ৫ কেজি বীজ এবং নেরিকা চাষের ক্ষেত্রে ১০ কেজি বীজ প্রদান করা হবে। এছাড়া উভয় ধরণের আউশ চাষের জন্য জনপ্রতি ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি ডিএপি প্রদান করা হবে;
প্রণোদনার প্রত্যাশিত সুফলঃ এ প্রণোদনার ফলে অতিরিক্ত ৭০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হবে। যার মূল্য ২ শত ২৪ কোটি টাকা এবং খড়ের মূল্য ৭ কোটি টাকা। চাল ও খড়ের মোট মূল্য ২৩১ কোটি টাকা দাঁড়াবে যার ব্যয় ও আয়ের অনুপাত ১:৮।
সংশ্লিষ্ট বস্নকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক মনোনীত উপজেলা পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, সংশিস্নষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/ মেম্বারের উপস্থিতিতে নির্বাচিত কৃষকের তালিকা উপজেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটির অনুমোদনের পর উপজেলা সদর থেকে সংশ্লিষ্ট কৃষকের ছবি সম্বলিত মাস্টার রোলের মাধ্যমে কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা বাবদ প্রাপ্ত উপকরণ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে। মাস্টার রোলে উপকরণ গ্রহণকারী কৃষক স্বাক্ষর/টিপসহি করবেন। নগদ টাকা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করা হবে। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান/সংশ্লিষ্ট মেম্বার, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি পুনর্বাসন বাস্তবায়ন কমিটি কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তা এতে প্রতিস্বাক্ষর করবেন। এ ভাবে প্রণোদনার সহায়তা বিতরণ করা হবে।