Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৫ মার্চ ২০২০

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ উপকূলবর্তী এলাকায় কৃষিবিপ্লব ঘটবে-কৃষিমন্ত্রী


প্রকাশন তারিখ : 2020-03-15

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষিবিজ্ঞানীগণ লবণাক্ততাসহিষ্ণু উন্নতজাতের ধান ব্রি ৬৭, ভুট্টা, সূর্যমুখী,গম, বার্লি এবং বিনাচাষে আলু ও রসুনের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন এবং ইতোমধ্যে এসবের পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী সম্পন্ন করেছেন। উদ্ভাবিত এসব প্রযুক্তি এবং ফসল চাষীরা চাষ করার সুযোগ পাবেন। এর মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ উপকূলবর্তী এলাকায় কৃষিবিপ্লব ঘটবে বলে মন্তব্য করেন কৃষিমন্ত্রী ডঃ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি। আজ বৃহস্পতিবার কৃষিমন্ত্রী খুলনার দাকোপ উপজলোর চরডাঙ্গায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রদর্শনী প্লট সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে এ মন্তব্য করেন। খুলনার দাকোপ উপজলোর চরডাঙ্গায় প্রায় ১০০ বিঘা  জমির উপর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রদর্শনী প্লট রয়েছে।

পরিদর্শন শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, যুগযুগ ধরে আমাদের উপকূলীয় এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এসব জমিতে সারা বছরে একবার ফসল হয়। আমন ধান তোলার পর বছরের বাকি সময়টা মাঠের পর মাঠ জমি অলস পড়ে থাকে। লবণাক্ততার কারণে এসব অঞ্চলে বছরে দুইবার বা তিনবার ফসল চাষ করা যায় না । এসব বিবেচনায় আমাদের লক্ষ্য ছিলো কীভাবে, কী ফসল লাগালে, কীভাবে পরিচর্যা করলে এই প্রতিকূলতার মাঝে, নানা বিপত্তি এবং জটিল পরিবেশে ফসল উৎপাদন করা যায়। আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই লবণাক্ততাসহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনে কাজ করে আসছিলেন । তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা উন্নত মানের  এসব জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছি।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ইতোমধ‌্যে নতুন জাতের ব্রি-৬৭ ধান আবিষ্কার করেছে। এটির উৎপাদনশীলতা অনেক বেশি। মন্ত্রী বলেন, উপকূলীয় এলাকা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে ফসল উৎপাদনের সমস্যা দুটি: লবণ সহিষ্ণু ফসলের জাতের অভাব এবং লবণাক্ততা ও সুপেয় পানির অভাব। ইতোমধ্যে লবণাক্ততাসহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনে আমরা সক্ষম হয়েছি। যে খালগুলো দিয়ে সুপেয় পানি আসতো সেগুলো পলিজমে ভরাট হয়ে গেছে। সেজন্য সুপেয় পানির প্রবাহ বাড়াতে খালগুলো পুন:খননের উদ্যোগ নেয়া হবে ।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলের কৃষির উন্নয়নে অনেকগুলো বিশেষ প্রকল্প দিয়েছেন ।  অনেক বরাদ্দ এসেছে ভবিষ্যতে আরো আসবে । কারণ, এ অঞ্চলের কৃষিক্ষেত্রের সম্ভাবনা  প্রচুর ও সীমাহীন। এসব প্রযুক্তি উপকূলবর্তী বিপুল এলাকার সকল চাষীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। চাষিরা এসকল ফসলের চাষ করলে এ এলাকার মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়বে। মানুষের জীবনযাত্রার মানের  পরিবর্তন হবে, দারিদ্র্য ও অভাব দূর হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, খুলনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলের সমস্যাগুলোর মধ্যে প্রধান সমস্যা হল লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা, সেচের পানির লবণাক্ততা, অনাবাদি ও স্থায়ী পতিত জমি প্রভৃতি । মৃত্তিকা গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের জরিপ মতে, খুলনার মোট ২ লাখ ১৩ হাজার হেক্টর আবাদযোগ্য জমির মধ্যে লবণাক্ত জমির পরিমাণ এক লাখ নব্বই হাজার হেক্টর। যা মোট আবাদযোগ্য জমির ৮৯ শতাংশ। এছাড়া লবণ পানির ভয়াবহতার কারণে শুষ্ক মওসুমে  সেচের পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়ায় প্রতিবছর শুষ্ক মওসুমে উপকূলীয় এলাকায় ৫ লক্ষাধিক হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যাচ্ছে।