বাংলাদেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে। দারিদ্রের হার কমেছে শিশু মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। কৃষিক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য খাদ্য ঘাটতির দেশটি আজ খাদ্য রপ্তানীর মর্যাদা অর্জন করেছে। আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে কৃষিকে শতভাগ যান্ত্রিকিকরণ ও বহুমুখীকরণ করা হবে। কৃষি বাণিজ্যিকিরণে, পোল্ট্রি বাণিজিকিরণে এবং ডেইরি বাণিজ্যিকিকরনে যেতে চায় বাংলাদেশ এ খাতে জাপানের সহযোগিতা প্রয়োজন। কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতে করে রপ্তানীর করা হবে এ নিয়ে কাজ চলছে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে পাশে থাকা জাপান এবার কৃষি উন্নয়নেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের সহযোগিতার জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান। এটি জাপান বাংলাদেশের বন্ধুত্বের নিদর্শন। এসময় মন্ত্রী কৃষি যন্ত্রে প্রোণদনার কথা উল্লেখ করেন।
আজ কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক সচিবালয় তাঁর অফিসকক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত Mr. Naoki Ito সাক্ষাৎ করতে আসলে এসব কথা বলেন ।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন; হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। এ টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সরকারি কোষাগার থেকে আসবে ৫ হাজার কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ আসবে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) থেকে। জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং কোরিয়ার স্যামসাং একটি কনসোর্টিয়াম হিসেবে টার্মিনালের নির্মাণকাজ করবে। বাংলাদেশে এ মুহুর্তে প্রয়োজন দেশি বিদেশি বিনিয়োগ। ১৯৭৩ সালে কৃষিখাতে আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে বাংলাদেশে প্রথম কাজ করে জাইকা।
বাংলাদেশ হতে আম আমদানির আগ্রহের কথা জানান জাপানের রাষ্ট্রদূত Mr. Naoki Ito। সে ক্ষেত্রে ফ্রুট ফ্লাই কিটমুক্ত আম চান। এছাড়াও জাপান কৃষিখাতে নির্দিষ্ট কৃষিকাজে দক্ষ জনবল নেয়ার কথা জানান।
কৃষি সচিব মো: নাসিরুজ্জামান রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বাংলাদেশে রপ্তানিযোগ্য আম সম্পুর্ণ নিরাপদ। আপনার দেশের যারা আম আমদানি করবে তাদের বাংলাদেশে ভ্রমনের আমন্ত্রণ জানাই , তারা কি ধরনের আম নিতে চান আমরা সেভাবেই নিরাপদ আম দিতে সক্ষম আছি, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় হতে এ নিশ্চিয়তা দেয়া হবে। এছাড়া বাংলাদেশ হতে মিষ্টি আলু, মুগডাল আমদানিরও প্রস্তাব দেন তিনি।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। একটি আদর্শ শিল্প প্রতিষ্ঠান করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা নিশ্চিত করবে সরকার, তার ১শ টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মাধ্যমে। জাপান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে, অংশীদারিত্ব গড়ে তুলছে, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নিবিড় করেছে। দেশের সকল সার কারখানায় জাপানের সহযোগিতা রয়েছে।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের দুর্দিনে যেসব দেশ বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে এগিয়ে এসেছে জাপানের স্থান সবার ওপরে। বাংলাদেশের জনগণ জাপানের সরকার ও জনগণকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে সবসময়। কৃষিবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কৃষি উৎপাদন খরচ কমানোর লক্ষ্যে ডিএপি সারের মূল্য হ্রাস করেছে। বাণিজ্যিক ফুল চাষের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে যশোর জেলায় কৃষি মন্ত্রণালয় আওতাধীন চাষকৃত ফুলবাগান পরিদর্শনের আহবান জানালে জাপানের রাষ্ট্রদূত তাতে সম্মতি জানান।
অতীতের মত বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে জাপানের সহযোগিতা থাকবে বল্লেন রাষ্ট্রদূত।